
এএইচ সেলিম উল্লাহ, কক্সবাজার::
পুরো কাজ শেষ হলে অনেকটাই বিমানের চড়া তৃপ্তি মিলবে কক্সবাজার টেকনাফ সড়কে। একই সঙ্গে যাতায়াতে কমবে সময়ও। তবে, অটোরিকশা (টমটম)র লাগাম না টানলে দুর্ঘটনা বাড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের উনচিপ্রাং থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার কাজ জোরেশোরে চলছে। ইতিমধ্যে এই সড়ক উন্নয়নের কাজ ৮৮ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে পুরোপুরি কাজ সম্পন্ন করে উন্মুক্ত করে দেয়ার কথা বলছে সড়ক বিভাগ।
কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এশিয়ান ডেভেলমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক উন্নয়নের কাজ বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু করে ২০২৩ সালের মার্চে।
সওজ জানায়, এই সড়কের ২২৩ মিটারের পাঁচটি ব্রিজ, ৯৩ মিটারের ১৬টি কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। একই সাথে ১৭ ফিটের প্রশস্ত ২৪ ফিটে উন্নীত করা হচ্ছে।
জানতে চাইলে কক্সবাজার সড়ক বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোস্তফা মুন্সী বলেন, ‘চলতি ফেব্রুয়ারির মধ্যে চারটি এবং আগামী মার্চে একটিসহ মোট পাঁচটি ব্রিজ চালু হবে। একইভাবে ১৫টি কালভার্টের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। একটির নির্মাণকাজ চলমান।
এদিকে গেল ২০ জানুয়ারি সড়ক সংস্কার কাজ সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন এডিবির প্রধান মি. নিম দজি’র নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। এসময় কাজের গুণগতমান দেখে প্রতিনিধিদলটি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
সড়ক বিভাগ জানিয়েছে, সড়ক উন্নয়ন কাজটি প্রকৌশলী সুনীল চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ দল প্রতিনিয়ত কাজ তদারক করেন। কোথাও কোনো ত্রুটি থাকলে সেটি সাথে সাথে সংশোধন করে দিচ্ছেন।
সওজ সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারে সওজের অধীনে থাকা সড়ক-মহাসড়টি ৫৫০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ১৫৮ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক। জাতীয় এ মহাসড়কের ১৫৮ কিলোমিটারের মধ্যে কক্সবাজার-উখিয়া-টেকনাফ সড়কের দৈর্ঘ্য ৭৯ কিলোমিটার।
জানা গেছে, মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে চাপ বহুগুণ বেড়েছে। সরকারি বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি দেশি-বিদেশি উন্নয়ন সেবা সংস্থাগুলোর গাড়ি চলাচলে সড়কটিতে চলছে অধিক যানবাহন। মাত্র ১৮ ফুট প্রস্থের এ সড়ক দিয়ে দৈনন্দিন নিয়মিত চলাচলকারী ব্যক্তিগত, গণপরিবহন ও পণ্যবাহী যানবাহনের যাতায়াত ছিল।
অতিরিক্ত যান চলাচলের কারণে প্রতিদিনই ঘটছে কোনো না কোনো দুর্ঘটনা। গত তেরো মাসে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন শতাধিক।
এসব কারণে দ্রুত সময়ে সড়কটি সম্প্রসারণ ও সংস্কারের লক্ষ্যে একটি জরুরি প্রকল্প গ্রহণ করে সওজ।
টেকনাফের বাসিন্দা মো. তাহের নঈম বলেন, সড়কের কাজ সম্পন্ন হলে স্থানীয়রা ছাড়া পর্যটকরা সুফল ভোগ করবে। এমনকি যাতায়াতের ক্ষেত্রে সময়ও কমবে। তিনি আরো বলেন, সড়ক যোগাযোগ উন্নতি ঘটলে সীমান্ত বাণিজ্যেও প্রসার ঘটবে। দুর্ঘটনা ঠেকাতে হাইওয়ে পুলিশকে আরো কঠোর হতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, রোকন উদ্দিন খালেদ চৌধুরী বলেন, ‘সড়কটিতে প্রতিদিনই বাড়তে থাকা যানবাহনের চাপ সামলানো কঠিন হয়ে পড়ছে। এডিবির অর্থায়নে সড়কটি সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। আশা করছি, শিগগিরই সুফল ভোগ করতে পারবে সাধারণ মানুষ।
পাঠকের মতামত